বাইক বর্তমান সময়ে যাতায়তের সবচেয়ে সহজ এবং দ্রুততম মাধ্যম। বর্তমান বাংলাদেশে বাইক ব্যাবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে সেই সাথে বাইকের ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করার গুরুত্ব ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আপনাকে সড়কপথে বৈথভাবে বাইক চালাতে হলে অব্যশ্যই আপনার বাইকের ট্যাক্স টেকেন সব সময় আপডেট করে রাখতে হবে। আপনার বাইকের ট্যাক্স টোকেনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে আপনাকে অবশ্যই আপনার বাইকের ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করে নিতে হবে। অন্যথায় আপনাকে ট্রাফিক মামলা এবং জরিমানার সম্মুখীন হওয়া লাগতে পারে।
রাস্তায় চলাচল করতে হলে আপনাকে অবশ্যই আপনার বাইকের ট্যাক্স টোকেন আপডেট রাখতে হবে। আজকের ব্লগটি ভালোভাবে পড়লে আপনি নিজে নিজেই অনলাইনে আপনার বাইকের ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
বাইকের ট্যাক্স টোকেন কি?
বাইকের ট্যাক্স টোকেন এমন একটি ডকুমেন্ট যা আপনার বাইকের বৈধতা প্রমান করে। অর্থাৎ আপনি বাংলাদেশের রাস্তা ব্যাবহার করছেন এবং আপনি তার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ট্যাক্স প্রদান করছেন কী না সেটি খুব সহজেই বোঝা যায় আপনার ট্যাক্স টোকেন দেখলে। ট্যাক্স টোকেন মূলত আপনার বাইকের মালিকানা এবং বৈধতা নিশ্চিত করে। তাই আপনার বাইকের ট্যাক্স টোকেনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলে আপনার বাইকের ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করে রাখুন।
বাইকের ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করার প্রয়োজনীয়তা
১. আইনগত বাধ্যবাধকতা: রাস্তায় বাইক চালানোর জন্য আপনার বাইকের নিবন্ধন এবং ট্যাক্স টোকেন থাকা বাধ্যতামূলক। ট্যাক্স টোকেন ছাড়া বাইক চালালে আপনি যোকোনো সময় আইনগতভাবে সমস্যা এবং জটিলটায় পড়বেন। তাই সবসময় আপনার বাইকের ট্যাক্স টোকেন আপডেট রাখার চেষ্ট করবেন।
২. নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ: আপনার বাইকের কোনো ক্ষতি হলে অথবা আপনার বাইক কোনো কারণে চুরি হয়ে গেলে বাইক খোজার জন্য আইনগত সহায়তা নিতে হলে আপনাকে অব্যই আপনার বাইকের নিবন্ধন এবং ট্যাক্স টোকেন আপডেট থাকা জরুরি। অন্যথায় আপনি আপনার আইনগত সহায়তা পাবেন না। তাই আপনার বাইকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আপানার বাইকের ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করে রাখুন।
৩. জরিমানা এড়ানো: একটি নির্দিশষ্ট সময়ের মধ্যে বাইকের ট্যাক্স টোকেন রিনিউ না করলে আপনাকে জরিমানা দিতে হতে পারে। তাই ট্যাক্স টেকেনের মেয়াদ উত্তীর্ন হওয়ার সাথে সাথেই ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করে রাখুন।
বাইকের ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করার নিয়ম
বাইকের ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করা খুবই সহজ একটি প্রক্রিয়া। আপমাদের আকরে পোষ্টটি সম্পূর্ন পরলে আপনি নিজেই ঘরে বসে আপনার বাইকের ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করে নিতে পারবেন।
১. প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস প্রস্তুত করুন
বাইকের ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করার সময় আপনাকে কিছু কাগজপত্র প্রস্তুত করতে হবে। যেমন:
- বাইকের নিবন্ধন সার্টিফিকেট: বাইক রেজিস্ট্রেশন এর পারে আপনার বাইকের একটি রেজিস্ট্রেশন কার্ড দেওয়া হয় ওই কার্ডে বাইকের সকল ইনফরমেশন থাকে বাইকের ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করতে আপনার বাইকের রেজিস্ট্রেশন কার্ড লাগবে।
- একটি মোবাইল নম্বর: বাইকের ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করার জন্য আপনার Brta ওয়েবসাইটে একটি একাউন্ট তৈরি করতে হবে এবং একাউন্ট তৈরি করার সময় আপনার একটি ফোন নম্বর প্রয়োজন হবে। তবে মনে রাখবেন আপনি যে নামে একাউন্ট তৈরি করবেন মোইল নম্বরটি তার নামেই রেজিস্ট্রেশন থাকতে হবে।
- পূর্ববর্তী ট্যাক্স টোকেন: পূর্ববর্তী বছরের ট্যাক্স টোকেন এবং রসিদ। তবে অনলানে ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করার জন্য আবেদন করতে পূর্ববর্তী ট্যাক্স টোকেন প্রয়োজন হয়ন।
- জাতীয় পরিচয়পত্র: অনলাইনে ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করতে হলে আপনাকে Brta ওয়েবসাইটে একটি একাউন্ট খুলতে হবে।Brta ওয়েবসাইটে একউন্ট খুলততে হলে আপনার ন্যাশনাল আইডি কার্ড লাগবে।
২. অনলাইন মাধ্যমে আবেদন
অনলাইনের মাধ্যমে আপনি খুব সহজে Brta ওয়েবসাইট থেকে ঘরে বসে ট্যাক্স টোকেন নবায়ন করতে পারবেন। নিজে নিজে আবেদন করলে আপনার সময় অনেক সাশ্রয় হবে এবং আপনি খুব সহজে Brta ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ট্যাক্স টোকেন নবায়ন করতে পারবেন।
ধাপগুলি অনুসরণ করুন:
- Step 1: ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করার জন্য প্রথমে আপনাকে Brta(https://www.brta.gov.bd) ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে এবং আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের সাথে মিল রেখে সকল তথ্য দিয়ে একটি একাউন্ট তৈরি করে নিতে হবে।
- Step 2: একাউন্ট তৈরি করার পর আপনার একাউন্ট লগ ইন থাকা অবস্থায় মোটরজানের তথ্যে ক্লিক করতে হবে। তারপর মোটরজান সংযুক্তকরণ অপশনটিতে ক্লিক করুন।
- Step 3: আপনার বাইক সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করুন, যেমন বাইকের নিবন্ধন নম্বর, রেজিস্ট্রেশন সনদ ইত্যাদি। যেসকল ইনফরমেশন চাইবে সবগুলো দিয়ে দিন এবং নবায়ন করুন এ ক্লিক করুন।
- Step 4: তারপর আপনার বাইকের কত টাকা ট্যাক্স বাকি আছে সকল তথ্য দেখাবে। বাইকের ২ বছরের ট্যাক্স সাধারণত ২৩০০ টাকা হয়ে থাকে। তবে ট্যাক্স টোকেন নবায়ন ফি এর সাথে আপনার ট্রাস্টি বের্ড এর সার্টিফিকেট ফি বাবদ বাড়তি ১১৫০ টাকা ফি দেওয়া লাগতে পারে।
- Step 5: ওপরের সবগুলো স্টেপ পার করার পর আপনাকে পেমেন্ট করতে হবে। পেমেন্ট করার জন্য আপনি বিভিন্ন পেমেন্ট মেথড পেয়ে যাবেন। যেমন বিকাশ নগদ ইত্যাদি পেয়ে যাবেন। আপনি যে মেথডে পেমেন্ট করতে চান সেই পেমেন্ট মেথড সিলেক্ট করুন। এপং পেমেন্ট করে দিন।
৩. নতুন ট্যাক্স টোকেন গ্রহণ
আপনার সকল তথ্য ঠিকঠাক থাকলে আপনি ১০ – ১৫ দিনের মধ্যে ট্যাক্স টোকেন পেয়ে যাবেন। অনলাইন থেকে ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করলে আপনার ট্যাক্স টোকেনটি কুরিয়ার সার্ভিস অথবা ডাক বিভাগের মাধ্যমে হোম ডেলিভারি দেওয়া হবে।
৪. ট্যাক্স টোকেন পেতে কত সময় লাগে?
বর্তমান তথ্য প্রযুক্তি আরও উন্নত হওয়ায় ট্যাক্স টোকেন হাতে পেতে বেশি সময় লাগে না। সাধারণত ট্যাক্স টোকেন রিনিউ এর আবেদন করার ১০-১৫ কার্জদিবসের মধ্যে ট্যাক্স টোকেন হাতে পাওয়া যায়।
অফলাইনে ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করার প্রক্রিয়া
বর্তমান সময়ে অনলাইনে খুব সহজে ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করা যায়। তবে আপনি যদি অনলাইন থেকে ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করতে না চান তাহলে আপনি অফলাইনে খুব সহজে ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আপনার পুরাতন ট্যাক্স টোকেন এবং বাইকের রেজিস্ট্রেশন কার্ড নিয়ে ব্যাংক ড্রাফ করে খুব ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করে নিতে পারেন।
ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করার জন্য কিছু টিপস
১. সময় মতো ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করুন: সময়মতো ট্যাক্স টোকেন নবায়ন না করলে ট্যাক্স অনেক পেন্ডিং হয়ে যায় সেক্ষেত্রে আপনার অনেক ট্যাক্স পেন্ডিং হয়ে যেতে পারে আবার ট্রাফিক পুলিশ আপনার বাইক চেক করে আপনার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা ও নিতে পারে। তাই আপনি সময় মতে আপনার ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করে রাখুন।
২. নতুন ফিটনেস সার্টিফিকেট চেক করুন: বাইক চালানোর আগে, ফিটনেস সার্টিফিকেট ও কাগজপত্র সব ঠিক আছে কিনা তা যাচাই করে নিন।
আপনার বাইকের ট্যাক্স টোকেন আপডেট না রাখলে আপনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জটিলটায় পড়তে পারেন এবং আপনার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা ও নেওয়া হতে পারে তাই আপনি সময়মতো আপনার ট্যাক্স টোকেন রিনিউ করে রাখুন।।